মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার, নতুন করে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়েছে, যদিও এর জন্য কোনো স্থানীয় মৌলিক কারণ ছিল না। দিনের একমাত্র নির্ধারিত ইভেন্ট ছিল মার্কিন কংগ্রেসে জেরোম পাওয়েলের ভাষণ, যা সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবুও, সারাদিন ধরে ইউরোর মূল্য স্থিরভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতার মাত্রা কম ছিল, এবং মূল্যের সামগ্রিক মুভমেন্ট কিছুটা এলোমেলো মনে হয়েছে। হায়ার টাইমফ্রেমে, এটি স্পষ্ট যে এই পেয়ার মূলত সাইডওয়েজ প্রবণতা ট্রেড করছে, যদিও এই মুহূর্তে কোনো সুস্পষ্ট রেঞ্জ নির্ধারিত নেই।
এ ধরনের মুভমেন্ট অবাক করার মতো নয়। আমরা কয়েক সপ্তাহ আগে উল্লেখ করেছিলাম যে দৈনিক টাইমফ্রেমে একটি কারেকশন প্রয়োজন, এবং কারেকশনগুলো সাধারণত মূল্যের জটিল কাঠামোর মাধ্যমে ঘটে, যা স্বল্পমেয়াদী মুভমেন্টকে বিশ্লেষণ করা কঠিন করে তোলে। এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে ফরেক্স মার্কেটে মূল্যের পরিবর্তনের জন্য সবসময় মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণের প্রয়োজন হয় না। তাই এই পেয়ারের মূল্যের সোমবারের মুভমেন্ট পুরোপুরি যুক্তিসঙ্গত না হলেও, এটি একেবারে অযৌক্তিকও ছিল না।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার ৫-মিনিট টাইমফ্রেমে কোনো কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়নি। শুধুমাত্র মার্কিন সেশনের শেষের দিকে (রাতের সময়) এই পেয়ারের মূল্য 1.0334–1.0359 রেঞ্জের উপরে কনসোলিডেট করেছে। তবে, রাতের বেলায় ট্রেডাররা সাধারণত নতুন পজিশন ওপেন করে না, এবং ব্রেকআউটটি দুর্বল ও অনির্ভরযোগ্য ছিল। ফলে, আমরা মনে করি না যে ইউরোর মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট আজও অব্যাহত থাকবে।
বুধবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, বর্তমানে মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। যদিও স্থানীয় পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছু সময়ের জন্য বাধাগ্রস্ত হয়েছিল, তবে তা পুনরায় শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি যে ইউরোর মূল্য আবারও হ্রাস পেতে পারে, কারণ মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণগুলো এখনো মার্কিন ডলারের পক্ষে কাজ করছে। তবে, দৈনিক ভিত্তিতে এই পেয়ারের মূল্যের কারেকশন আরও কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হতে পারে।
বুধবার এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট অস্থির ও অনিশ্চিত হতে পারে, কারণ কারেকশন এখনো চলমান রয়েছে। তাই ট্রেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল লেভেলগুলোর উপর নির্ভর করা উচিত।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে পর্যবেক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0156, 1.0221, 1.0269–1.0277, 1.0334–1.0359, 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, এবং 1.0845–1.0851।
বুধবার, জেরোম পাওয়েল কংগ্রেসে তার দ্বিতীয় ভাষণ দেবেন। তার পূর্ববর্তী বক্তব্যে, তিনি সিনেট ব্যাংকিং কমিটির সামনে কোনো নতুন তথ্য উপস্থাপন করেননি, এবং আজকের বক্তব্য থেকেও উল্লেখযোগ্য কোনো অন্তর্দৃষ্টি পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে, আজ মার্কিন ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচিত হয়।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।