বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট:
বৃহস্পতিবার, গত তিন দিন দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার পর EUR/USD পেয়ারের মূল্য কার্যত স্থবির ছিল। এমনকি মার্কিন ডলারকে শক্তিশালী করার মতো জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক থাকলেও, মার্কেটে কার্যত কোনো সক্রিয় মুভমেন্ট দেখা যায়নি, যা এই পেয়ারের মূল্যের সাম্প্রতিক অসংলগ্ন মুভমেন্টের আরও একটি উদাহরণ। ইসিবির আর্থিক নীতিমালা নমনীয় করার সিদ্ধান্ত ইউরোর মূল্য হ্রাস ঘটানোর কথা ছিল, কিন্তু মার্কেটের ট্রেডাররা শুধুমাত্র ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের দিকে নজর দেওয়ায় এমন কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। যদিও এই সপ্তাহে ডলারের তীব্র দরপতন ঘটেছে, তবে আজ বা আগামী সপ্তাহে ডলারের মূল্যের রিবাউন্ড শুরু হতে পারে। তবে, বর্তমানে মার্কেটে কোন যুক্তিসঙ্গত দিকনির্দেশনাবিহীন মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে। মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতি ট্রেডাররা কীভাবে মৌলিক প্রেক্ষগাপট ব্যাখ্যা করে তার উপর নির্ভর করছে। সেইসাথে, ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কোনো সুস্পষ্ট ট্রেন্ডলাইন দেখা যাচ্ছে না, যা এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সমাপ্তি নির্দেশ করতে পারে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট:
বৃহস্পতিবার, পাঁচ মিনিটের চার্টে EUR/USD পেয়ারের মূল্য সব গুরুত্বপূর্ণ লেভেল উপেক্ষা করেছে। ইউরোপীয় সেশনে কার্যত কোনো মোমেন্টাম দেখা যায়নি, যখন মার্কিন সেশনে অস্থিরতার মাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও তা খুব বেশি বড় প্রভাব ফেলেনি। শুরুতেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, 1.0797–1.0804 রেঞ্জ ট্রেডারদের জন্য আকর্ষণীয় ছিল না, ফলে 1.0845–1.0851 রেঞ্জ থেকে রিবাউন্ডের ফলে একটিমাত্র কার্যকর সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল।
শুক্রবার কীভাবে ট্রেডিং করতে হবে?
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে। যেহেতু মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও মার্কিন ডলারের পক্ষে এবং ইউরোর বিপক্ষে কাজ করছে, তাই আমরা পেয়ারের দরপতন আশা করছি। তবে, মূল নিম্নমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হওয়ার আগে স্বল্পমেয়াদে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন প্রবণতা দেখা যেতে পারে। বর্তমানে মার্কেটে ইউরো শক্তিশালী হতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না, বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিমালার কারণে স্পষ্টভাবেই ডলার দুর্বল হয়েছে।
শুক্রবার, ইউরোর মূল্য যেকোনো দিকেই ট্রেড করতে পারে, কারণ মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখন আর এই পেয়ারের মূল্য নির্ধারণে ধারাবাহিক প্রভাব ফেলছে না। তবে, আজ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট থাকার কারণে এই পেয়ারের মূল্যের ভোলাটিলিটি বা অস্থিরতা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাঁচ মিনিটের চার্টে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.0334–1.0359, 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0845–1.0851, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952।
আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: শ্রম বাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদন, বেকারত্বের হার এবং মজুরি বৃদ্ধির প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে চতুর্থ প্রান্তিকের চূড়ান্ত জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। সেইসাথে ইসিবির প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ডে এবং ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল আজ বক্তব্য দেবেন। এই বিবেচনায়, আজ মার্কেটে এই পেয়ারের মূল্যের উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা বিরাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে
- সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
- লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
- MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ এবং প্রতিবেদন
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।