ইউরোর ট্রেডের বিশ্লেষণ এবং ট্রেডিংয়ের পরামর্শ
যখন MACD সূচকটি ইতোমধ্যে শূন্যের উল্লেখযোগ্য উপরে উঠে গিয়েছিল তখন এই পেয়ারের মূল্য প্রথমবার 1.0872 এর লেভেল টেস্ট করেছিল, যা এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করেছিল। এই কারণেই, আমি ইউরো কেনার সিদ্ধান্ত নেইনি। কিছুক্ষণ পরে, 1.0872 লেভেল দ্বিতীয়বার টেস্ট করা হয়েছিল, সেসময় MACD সূচকটি ওভারবট জোনে অবস্থান করছিল, যা এই পেয়ার বিক্রির জন্য দ্বিতীয় পরিকল্পনা (#2) বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করেছিল, ফলে ইউরোর মূল্য ৩০ পিপস হ্রাস পেয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশার চেয়ে নেতিবাচক ফলাফল দেখা গিয়েছে, যা মার্কেটে ডলার বিক্রির প্রবণতা সৃষ্টি করেছে। তবে, এটি EUR/USD পেয়ারের মূল্যের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটায়নি। শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের নেতিবাচক ফলাফল সত্ত্বেও, মার্কিন অর্থনীতির কিছু শক্তিশালী দিক, যেমন স্থিতিশীল ভোক্তা চাহিদা, ডলারের দরপতনকে সীমিত রাখতে পারে। পাশাপাশি, মার্কেটের ট্রেডারদের দৃষ্টি এখন ফেডারেল রিজার্ভের আসন্ন বৈঠকের দিকে রয়েছে, যেখানে সুদের হারের বিষয়ে নতুন সংকেত প্রদান করা হতে পারে। অন্যদিকে, ইউরোপ এখনও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে, যা ইউরোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে।
আজকের দিনটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে ঘটনাবহুল হবে। জার্মানির শিল্প খাতের পরিবর্তন এবং ট্রেড ব্যালেন্স সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, এবং ইউরোজোনে সেন্টিক্স থেকে বিনিয়োগকারী আস্থা সূচক প্রকাশিত হবে। কেবলমাত্র জার্মানির শিল্প উৎপাদনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেলে সেটি ইউরোর চাহিদা বৃদ্ধি করতে পারে। অন্যথায়, মার্কিন শ্রমবাজার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশের পর EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে, তা আরও জোরদার হতে পারে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা সক্রিয়ভাবে ইউরো বিক্রির সুযোগ খুঁজছে।
জার্মানির শিল্প খাত নিয়ে এখনো সতর্ক প্রত্যাশা রয়েছে, কারণ জ্বালানি সংকট এবং সরবারহ সংক্রান্ত সমস্যাগুলো উৎপাদন খাতের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে চলেছে। যদি আসন্ন প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে নেতিবাচক হয়, তাহলে ইউরো আরও বিক্রির চাপে পড়তে পারে। ট্রেড ব্যালেন্স সংক্রান্ত প্রতিবেদনও বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। রপ্তানি হ্রাস পেলে বা আমদানি বৃদ্ধি পেলে সেটি জার্মানির অর্থনীতির দুর্বলতার ইঙ্গিত দিতে পারে এবং ইউরোর মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা আরও তীব্র হতে পারে। সেন্টিক্স সূচক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন বর্তমান পরিস্থিতিতে শিল্প উৎপাদন ও ট্রেড ব্যালেন্সের তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ। তবুও, এই সূচকের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ইউরোকে কিছুটা সমর্থন জোগাতে পারে এবং বিক্রির চাপ হ্রাস পেতে পারে।
দৈনিক কৌশলের জন্য, আমি মূলত পরিকল্পনা #1 ও পরিকল্পনা #2 বাস্তবায়নের দিকে বেশি মনোযোগ দেব।
বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: আজ যখন ইউরোর মূল্য 1.0900-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে 1.0852-এর (চার্টে সবুজ লাইন দ্বারা চিহ্নিত) লেভেলে পৌঁছাবে, তখন আপনি ইউরো কিনতে পারেন। মূল্য 1.0900-এর লেভেলে গেলে, আমি বাই পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 30-35 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর সেল পজিশন ওপেন করব। শুধুমাত্র ইউরোজোনের সামষ্টিক প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হলে দিনের প্রথমার্ধে ইউরোর মূল্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ! এই পেয়ার কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং সেখান থেকে উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: আজ MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.0827-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রে আমি ইউরো কেনার পরিকল্পনা করছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী দিকে নিয়ে যাবে। আমরা 1.0852 এবং 1.0900-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির প্রত্যাশা করতে পারি।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: EUR/USD পেয়ারের মূল্য চার্টে লাল লাইন দ্বারা চিহ্নিত 1.0827-এর লেভেলে পৌঁছানোর পর আমি ইউরো বিক্রি করার পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.0792-এর লেভেল, যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি সেল পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে বিপরীত দিকে 20-25 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে ইউরোর বাই পজিশন ওপেন করব। ইউরোজোনের সামষ্টিক প্রতিবেদনের দুর্বল ফলাফল প্রকাশিত হলে এই পেয়ারের বিয়ারিশ প্রবণতা ফিরে আসবে। গুরুত্বপূর্ণ! বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং শূন্যের নিচে নামতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.0852-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরো বিক্রি করতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী করবে। আমরা 1.0827 এবং 1.0792-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করতে পারি।
চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় সবুজ লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্দেশ করে, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন এন্ট্রি প্রাইস নির্দেশ করে যেখানে এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয় করা যেতে পারে।
- গাঢ় লাল লাইনে টেক-প্রফিট (TP) অর্ডার সেট করা যেতে পারে বা এটি ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার সময় ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন মূল্যায়নের জন্য MACD সূচক ব্যবহার করা উচিত।
নতুন ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ:
- নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের মার্কেটে এন্ট্রি নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে মার্কেটে এন্ট্রি না করাই উত্তম। যদি আপনি সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেডিং করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে লোকসানের সম্ভাবনা হ্রাসের জন্য অবশ্যই স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। স্টপ-লস অর্ডার ছাড়া ট্রেডিং করলে দ্রুত আপনার সম্পূর্ণ ডিপোজিট শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষত যদি আপনি অর্থ ব্যবস্থাপনার নীতিমালা উপেক্ষা করেন এবং বেশি ভলিউমে ট্রেড করেন।
- মনে রাখবেন, সফল ট্রেডিংয়ের জন্য একটি সুসংগঠিত ট্রেডিং পরিকল্পনা থাকা আবশ্যক, ঠিক যেমনটি উপরে নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে সেটি দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা ট্রেডারদের জন্য লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।