শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

শুক্রবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্য স্বল্প সময়ের জন্য ঊর্ধ্বমুখী হয়েছিল; তবে, এই বৃদ্ধি দীর্ঘস্থায়ী ছিল না এবং বিশেষভাবে শক্তিশালীও ছিল না। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের সময় ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছিল, যখন কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন বা ঘোষণা প্রকাশিত হয়নি। একমাত্র প্রতিবেদন ছিল জার্মানির ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় মুদ্রাস্ফীতি অনুমান, যা প্রথম অনুমানের সঙ্গে মিলে গেছে। ফলে, এটি বলা যায় যে কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। আমরা আগেও উল্লেখ করেছি যে, বর্তমানে মার্কেটের মুভমেন্ট মূলত ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত এবং বিবৃতির দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। ট্রাম্প কখন শুল্ক সম্পর্কিত নতুন সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেবেন এবং সেই সিদ্ধান্তগুলো কী হবে, তা পূর্বানুমান করা কঠিন। এই অনিশ্চয়তা প্রায়ই এমনভাবে এই পেয়ারের মূল্যের পরিবর্তন ঘটায়, যা সাধারণ অর্থনৈতিক মৌলিক কারণগুলোর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়। ইউরোর মূল্য এখনো স্থানীয় সর্বোচ্চ লেভেলের কাছাকাছি অবস্থান করছে, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা এমন প্রতিবেদন ও ইভেন্টগুলো উপেক্ষা করছে, যেগুলো সাধারণত মার্কিন ডলারকে সমর্থন যোগায়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মার্কিন অর্থনীতি বর্তমানে মন্দার মধ্যে নেই, এবং ফেডারেল রিজার্ভ 2025 সাল সুদের হার সংক্রান্ত নীতিমালায় কোনো পরিবর্তন আনেনি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার, ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে এগুলো থেকে উল্লেখযোগ্য মুনাফা অর্জিত হয়নি। 1.0845-1.0851 রেঞ্জের আশেপাশে গঠিত প্রথম সিগন্যালটি ভুল প্রমাণিত হয়েছিল, কারণ মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকে 15 পিপসও অতিক্রম করতে পারেনি। পরবর্তী বাই সিগন্যালটি কিছুটা কার্যকর ছিল, তবে তা উল্লেখযোগ্য লাভের জন্য যথেষ্ট ছিল না। একমাত্র সেল সিগন্যাল থেকে সর্বোচ্চ 10 পিপস লাভ করা যেতে পারত।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো মধ্যমেয়াদে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, যদিও এই প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা কমছে। বর্তমান মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে বেশি সমর্থন করছে, তাই আমরা এখনও এই পেয়ারের মূল্য হ্রাসের সম্ভাবনা বিবেচনা করছি। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিয়মিত শুল্ক সংক্রান্ত ঘোষণাগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নীতির কাঠামো নিয়ে মন্তব্য করে ডলারের মূল্যের উচ্চ অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন। এর ফলে, রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক কারণগুলো বর্তমানে মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক উপাদানগুলোর তুলনায় বেশি প্রভাব বিস্তার করছে।
সোমবার, যেকোনো দিকে EUR/USD পেয়ারের ট্রেড করা হতে পারে, কারণ মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি মার্কেটের ওপর স্বাভাবিকভাবে প্রভাব ফেলছে না। নতুন সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প কী ধরনের ঘোষণা দিতে পারেন তা আগেই ধারণা করা অসম্ভব।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে পর্যবেক্ষণযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হল: 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, 1.0845-1.0851, 1.0888-1.0896, 1.0940-1.0952, 1.1011, এবং 1.1048। সোমবার, ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ECB) প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড বক্তৃতা দেবেন, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। উভয় ইভেন্টই গুরুত্বপূর্ণ, তবে বর্তমানে মার্কেটের ট্রেডাররা মূলত ট্রাম্পের বিবৃতিগুলোর প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শুন পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।