বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের ফলাফল ঘোষণার পর EUR/USD কারেন্সি পেয়ার দরপতনের সম্মুখীন হয়। অবশেষে, আমরা মার্কিন ডলারকে কিছুটা শক্তিশালী হতে দেখতে পেলাম এবং শেষ পর্যন্ত মার্কেটের ট্রেডাররা কিছুটা যুক্তিসঙ্গত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। মনে করিয়ে দিতে চাই যে, FOMC-এর বৈঠকটির ফলাফলকে হকিশ বা কঠোর হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে, মার্কেটে আতঙ্ক বিরাজ করছিল—সবকিছু একসাথে শুরু হয়েছিল: যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা, ফেডের আগ্রাসীভাবে সুদের হার হ্রাস, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং আরও অনেক কিছু। তবে, জেরোম পাওয়েল এবং FOMC স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে উদ্বেগের কিছু নেই: যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে, শ্রমবাজারও শক্তিশালী রয়েছে, ফেড ২০২৫ সালে মাত্র দুইবার সুদের হার হ্রাসের প্রত্যাশা করছে, এবং মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসই তাদের প্রধান অগ্রাধিকার হবে। হ্যাঁ, জিডিপির পূর্বাভাস কমানো হয়েছে, তবে মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাস বাড়ানো হয়েছে—এবং উচ্চতর মুদ্রাস্ফীতি এই ইঙ্গিত দেয় যে সুদের হার দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ থাকবে অথবা ধীরগতিতে হ্রাস পাবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বৃহস্পতিবার ৫-মিনিট টাইমফ্রেমে দুটি কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। প্রথমে, পেয়ারটির মূল্য 1.0888–1.0896 জোন ব্রেক করে এবং পরে 1.0845–1.0851 জোনও ব্রেক করে। দুর্ভাগ্যবশত, বিক্রেতারা মূল্যকে 1.0797–1.0804 জোনে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়, ফলে মূল্য দ্বিতীয় জোনে ফিরে আসে, যেখানে নতুন ট্রেডাররা শর্ট পজিশন ক্লোজ করতে পারতো। এতে প্রায় ৩০ পিপস লাভ করা সম্ভব ছিল।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এখনো মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করছে, তবে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা কমছে। যেহেতু মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো ইউরোর তুলনায় মার্কিন ডলারকে বেশি সমর্থন করছে, আমরা এখনো দরপতনের প্রত্যাশা করছি। তবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায়শই শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ও বৈশ্বিক নিয়মনীতি নিয়ে বক্তব্যের মাধ্যমে ডলারকে ক্রমাগত চাপের মধ্যে ফেলছেন। এর ফলে, মৌলিক এবং সামষ্টিক উপাত্তগুলো রাজনীতি ও ভূ-রাজনীতির ছায়ায় ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, যা ডলারের ধারাবাহিক দুর্বলতার প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শুক্রবার, ইউরোর মূল্য আরও কমে যেতে পারে, কারণ দীর্ঘদিন পর মার্কেটের ট্রেডাররা মৌলিক উপাত্তের প্রতি যথাযথ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে, পেয়ারটির মূল্য ঊর্ধ্বমুখী চ্যানেল থেকে বেরিয়ে এসেছে। ডলার বর্তমানে অতিরিক্ত বিক্রির শিকার হয়েছে এবং যথাযথ কারণ ছাড়াই এটির মূল্য কম বৃদ্ধি পেয়েছে— অন্তত যৌক্তিকভাবে কারেকশন হতে পারে।
৫-মিনিটের চার্টে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0845–1.0851, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1048। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোজোনে কোনো বড় ইভেন্ট নেই, যা মার্কেটে স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে; তবে ইউরোর সামান্য দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।